এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা
আপনি কি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতার সম্পর্কে জানতে চান? আজকের আর্টিকেলে আপনি জানবেন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা সম্পর্কে। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা
ভূমিকা
অলিভ অয়েল এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি অয়েল। অলিভ অয়েল যেকোনো রান্নায় ব্যবহার করা যায়, সেই সাথে ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহার করা যায়। যে সমস্ত ব্যক্তিরা স্বাস্থ্য সচেতন তারা রান্নার কাজে অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন। অলিভ অয়েল সবথেকে বেশি ব্যবহার করে আসছে গ্রীক ও রোমানরা। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর যথেষ্ট স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এতে রয়েছে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি পলিফেনল সমৃদ্ধ এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখে আসি, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা গুলো কি কি।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা
আমাদের শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা, হৃদরোগের ঝুঁকি, হজমের সমস্যা এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। অলিভ অয়েল রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও রান্নার স্বাদ বাড়াতে অলিভ অয়েল এর ভূমিকা অতুলনীয়। অলিভ অয়েল খাওয়ার পাশাপাশি, ত্বকের যত্নেও অনেক উপকারী এতে রয়েছে অনেক রকম পুষ্টিগুণ। আর তাই এখন আমরা জানব, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। আসুন ধাপে ধাপে জেনে আসি,
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া হৃদপিন্ডের জন্য অনেক বিপদজনক। আর তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে সব সময় চেষ্টা করতে হবে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখার। তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাসে অলিভ অয়েল এর ব্যবহার করা উচিত। এতে করে শরীরের খারাপ কলেস্টেরল কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল করা উচিত, এই তেলের পুষ্টিকর উপাদান গুলি শরীরের ইনসুলিনের কর্ম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। এটি শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আরো পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এ রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আর তাই ওজন কমাতে হলে প্রতিদিন সকালে অলিভ অয়েল, সাথে লেবু, পানি খেয়ে নিলে শরীরের ক্ষুধা কমে এবং ওজন হ্রাস পায়।
হজম সমস্যায়ঃ আমাদের মধ্যে অনেকেরই হজমের সমস্যা দেখা দেয়। সঠিকভাবে হজম না হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই হজম সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ভাবে অলিভ অয়েল খাওয়া উচিত। কারণ এতে রয়েছে, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা বদহজম বা গ্যাসের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও কমিয়ে আনে।
কানের সমস্যায়ঃ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা, অনেকের কানের সমস্যা দেখা যায়, কান চুলকায় বা দুর্গন্ধ বের হয়। যে সমস্ত ব্যক্তির এই সমস্যাগুলো থাকে তারা একটি কটনে অলিভ অয়েল নিয়ে ধীরে ধীরে কান পরিষ্কার করতে পারে। এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
সৌন্দর্যচর্চায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
সৌন্দর্যচর্চায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। ত্বকের যেকোনো সমস্যায়, ত্বক পরিষ্কার করতে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর বিকল্প নেই। আসুন দেখে নেই, সৌন্দর্যচর্চায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর গুনাগুন।
ময়েশ্চারাইজার হিসেবেঃ অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। কারণ এতে রয়েছে, লিনোলিক অ্যাসিড যা ত্বকের পানি বাষ্প হতে দেয় না। নিয়মিতভাবে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহারে ত্বক কোমল ও নরম থাকে।
ঠোঁটের যত্নেঃ আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো ঠোঁট। ঠোঁটের যত্নে আমরা অনেক রকম প্রোডাক্ট ব্যবহার করি, কিন্তু তারপরেও ঠোঁটের স্বাভাবিক কোমলতা বজাই থাকে না। আর তাই ঠোঁট সুন্দর রাখতে, ঠোঁটের রুক্ষ ভাব দূর করতে নিয়মিতভাবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।
মেকআপ অপসারণেঃ আমরা মেকআপ অপসারণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করি। কিন্তু আপনি আপনার ত্বকে কোনরকম কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ছাড়াই, শুধুমাত্র অলিভ অয়েল ব্যবহার করে মেকআপ পরিস্কার করতে পারেন। এর জন্য একটি কটন প্যাটে অলিভ অয়েল নিয়ে আলতো করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এর ফলে মেকআপ খুব সহজে উঠে যাবে এবং ত্বক অনেক নরম হবে।
ব্রণ প্রতিরোধেঃ ব্রণের সমস্যায় অলিভ অয়েল খুবই কার্যকর। ব্রণের সমস্যা সমস্যা দূর করতে অলিভ অয়েল নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্নে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বিভিন্ন রকম ভাবেই ব্যবহার করা যায়, এর গুনাগুন অপরিসীম। এখন আমরা জানব, চুলের যত্নে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর ব্যবহার সম্পর্কে। আসুন তাহলে দেখে নেই চুলের যত্নে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর ব্যবহার গুলো।
চুল পড়া কমাতেঃ অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই, যা চুলের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন-ই চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-বি সহ আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। যা চুলের গ্রোথে সাহায্য করে।
চুল সিল্কি করতেঃ আমরা সাধারণত চুল সাইনি বা সিল্কি করতে কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকি। তবে অনেক সময় কন্ডিশনার চুলের গোড়ায় পৌঁছালে চুল পড়া শুরু হয়। আর তাই প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে অলিভ অয়েল চুলের জন্য খুবই উপকারী।
চুল জট মুক্ত রাখতেঃ অনেক সময় চুল অত্যন্ত ড্রাই হয়ে যাওয়ার কারণে জট ছাড়ানো সহজ হয় না। তবে নিয়মিতভাবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে চুলের জট ছড়ানো সহজ হয়। কারণ এটি ব্যবহারে চুল অনেক বেশি নরম ও সিল্কি হয়।
খুশকি দূর করতেঃ বিভিন্ন রকম কারণে আমাদের মাথায় খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। অনেকের খুশকির সমস্যা অত্যন্ত বেশি হয়ে থাকে। যাদের মাথায় খুশকির সমস্যা আছে তারা, অলিভ অয়েলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে করে খুবই উপকার পাবেন, মাথার খুশকির সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতাঃ উপসংহার
অলিভ অয়েল আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে নিয়মিতভাবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা উচিত। এটি যেমন খাওয়া যায়, ঠিক তেমনি ভাবে শরীরে মালিশ করলেও বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে
আজকের আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে আলোচনা করেছি, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর উপকারিতা, সৌন্দর্যচর্চায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ও চুলের যত্নে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হলে আর্টিকেলটি বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন, ধন্যবাদ। ২৫২৪২
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url