১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে
আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি এমন ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে। আপনারা যারা মাথায় খুশকি নিয়ে অশান্তিতে আছেন তারা এখান থেকে ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে তা জানতে পারবেন। তাহলে ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে জানতে পড়ুন।
খুশকি খুব অস্বস্তিকর এবং বিব্রতকর হতে পারে। খুশকি অন্যান্য অনেক কারণেও হতে পারে, যেমন আপনার মাথার ত্বকে অতিরিক্ত চর্বি হওয়া এবং ত্বকে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়া। চলুন জেনে নেওয়া যাক ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে।
সূচিপত্রঃ ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে
- ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে
- আপনার চুল আরও ঘন ঘন ধোয়া শুরু করুন
- নির্দিষ্ট কিছু খাবার খান বা এড়িয়ে চলুন
- আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করুন
- কর্পূর এবং নারকেল তেল
- লেবুর রস ব্যবহার
- নিম পাতা বা নিম তেল ব্যবহার
- মেথি বীজ ব্যবহার
- সবুজ চা বা গ্রিন টি
- লিস্টারিন মাউথওয়াশ
- মানসিক চাপের মাত্রা কমিয়ে দিন
- শেষ কথা
১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে
খুশকি নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়ঃ এমন অনেক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যা আপনি খুশকি ভালো করতে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন এবং এটি আপনাকে স্থায়ীভাবে খুশকি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে। যাইহোক ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কিছু উপাদান প্রস্তুত করতে হবে এবং ভালো ভাবে তা মিশ্রিত করে সাবধানে মাথায় লাগাতে হবে। আপনার হাতের কাছে এমন অনেক কিছু আছে যা দিয়ে আপনি খুশকি প্রতিরোধ করতে পারেন।
আপনার চুল আরও ঘন ঘন ধোয়া শুরু করুন
আপনার মাথার ত্বক যদি তৈলাক্ত হওয়ার কারণে খুশকি হয় তাহলে আপনার চুল আরও ঘন ঘন ধোয়া শুরু করুন বা ঘন ঘন শ্যাম্পু করুন। তাহলে মাথার তৈলাক্ত অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এভাবে খুশকি থেকেও আরাম পাওয়া যায়। অনেকের মধ্যে এই ধারণাটি রয়েছে যে ত্বকে প্রাকৃতিক তেলগুলিকে অনেকক্ষণ রাখতে হবে কিন্তু এটি সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আরো পড়ুনঃ রক্ত দান করার পর কি খাওয়া উচিত
ত্বকে বেশি তেল থাকলে ইস্টের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে যখন চুল ধোয়া হয় তখন তেল এবং মৃত ত্বকের কোষ আরও বেশি করে জমে। খুশকি বা সেবোরিক ডার্মাটাইটিস আছে এমন রোগীদের নিয়মিতভাবে সপ্তাহে কয়েকবার চুল ধুতে হবে যাতে তেল জমে থাকতে না পারে।
নির্দিষ্ট কিছু খাবার খান বা এড়িয়ে চলুন
যদিও ডায়েট করা এবং খুশকির মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আরও কিছু গবেষণার প্রয়োজন। তারপরেও কিছু খাবার কম খেলে প্রদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যা মাথার ত্বক ভালো রাখতেও সাহায্য করতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ভালো খাবারের নিয়ম খামিরের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে ঠিক করে ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে যা খুশকির চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে।
কিছু খাবার যা আপনি খেলে খুশকি নিয়ন্ত্রণ হবেঃ
- সাদা রুটি, সাদা পাস্তা, টর্টিলাস এবং ক্র্যাকার
- লাল মাংস
- অনেক দিন প্রক্রিয়াজাত করা খাবার
- ভাজা খাবার
- চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয়
উপরন্তু এই খাবার গুলো ত্বকের অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে যেমন একজিমা যা মাথায় খুশকি বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও একেক জনের একেক খাবার থেকে সমস্যা হয় তবে সবচেয়ে সাধারণ কিছু হল সাদা ময়দা, আঠাযুক্ত পণ্য এবং নাইটশেড যেমন বেগুন, গোলমরিচ এবং টমেটো।
আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করুন
ভিনেগার এমন একটি উপাদান যা চুলকানি এবং শুষ্ক মাথার ত্বকের চিকিৎসায় সাহায্য করে। এটি খুশকি-সৃষ্টিকারী ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতেও সাহায্য করে। আপেল সিডার ভিনেগার চুল থেকে খুশকি দূর করার অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উপায় বলে মনে করা হয়। তাহলে বোঝা যায় যে ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে তার মধ্যে আপেল সিডার ভিনেগার খুব ভালো একটি উপায় হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ জিহ্বা ফুলে যায় কেন - জিহ্বা ফুলে যাওয়ার কারণ
তবে মনে রাখবেন এটির ভালো ফলাফল পেতে আপনি কীভাবে এটি তৈরি করবেন তার উপরও এটা নির্ভর করে। কিভাবে আপেল সিডার ভিনেগার এর একটি পেস্ট প্রস্তুত করবেনঃ পানিতে কিছু আপেল সিডার ভিনেগার নিন সমান ভাবে। আপনার চুল ধুয়ে নিয়ে চুলে মিশ্রণটি ভালোভাবে লাগান। আলতো করে আপনার চুল ম্যাসাজ করুন এবং শুকানোর জন্য ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
কর্পূর এবং নারকেল তেল
কর্পূর বা কর্পূর পাউডার প্রায় সবার বাড়িতেই থাকে। এটি একটি সেরা এবং সবচেয়ে কার্যকর উপাদান যা খুশকি সহ চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। আর আমরা সবাই বাড়িতেই নারকেল তেল ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনার যদি খুশকির সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নারকেল তেলের সাথে কর্পূর পাউডার মিশ্রিত করতে পারেন।
কীভাবে ব্যবহার করবেন তার টিপঃ একটি প্যানে নারকেল তেল গরম করুন। এর পর কর্পূর পাউডার তেলের সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি আপনার মাথার ত্বকে লাগান। খুশকি থেকে মুক্তি পেতে এবং ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে ভালো ফলাফল পেতে এটি সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহার করা করুন।
লেবুর রস ব্যবহার
চুল থেকে খুশকি দূর করার একটি প্রাকৃতিক উপায় হল নিয়মিত তেলের সাথে লেবুর রস ব্যবহার করা। তাজা লেবুর রস কয়েক ফোঁটা নারকেল তেলের সাথে ভালভাবে মেশান। কিন্তু আপনাকে 100% প্রাকৃতিক এবং খাঁটি নারকেল তেল ব্যবহার করতে হবে। এই মিশ্রণটি সরাসরি আপনার মাথার ত্বকে লাগান এবং ৩-৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনি দ্রুত ফলাফল পাবেন। তাহলে ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে তার সবথেকে দ্রুত উপায় হল লেবুর রস এর ব্যবহার।
নিম পাতা বা নিম তেল ব্যবহার
আপনি যদি খুশকি থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে নিম পাতা হল সঠিক সমাধান। আপনাকে যা করতে হবে তা হল এক কাপ নারকেল তেল গরম করে তাতে ২০টি নিম পাতা যোগ করুন। মিশ্রণটি প্রায় ১৫ মিনিটের জন্য গরম পানিতে ফুটান। তারপর আঁচ থেকে নামিয়ে কয়েক মিনিট ঠাণ্ডা করে পানি ছেঁকে একটি পাত্রে নিন। সপ্তাহে দুবার এই মিশ্রণ দিয়ে চুল ম্যাসাজ করুন। এর ফলে আপনার চুলের গঠন ভালো হয় এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
মেথি বীজ ব্যবহার
১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে তার আর একটি উপায় হল মেথি বীজ। চুল থেকে খুশকি দূর করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করার জন্য মেথি বীজ অন্যতম সেরা সমাধান। যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন এবং টেস্টোস্টেরন বেড়ে যাচ্ছে তাদের জন্য এটি খুব উপকারী।
কীভাবে ব্যবহার করবেন তার টিপসঃ প্রথমে একটি পাত্রে পানিতে কিছু মেথি দানা নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। তারপর এটা ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে, পেস্টে সামান্য লেবুর রস দিয়ে ভালো করে করে মিশিয়ে নিন। এবার পেস্টটি আপনার মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি শুকিয়ে গেলে আপনি ফলাফল দেখতে পাবেন।
সবুজ চা বা গ্রিন টি
গ্রিন টি-এর অনেক উপকারিতা রয়েছে যার মধ্যে অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ও রয়েছে। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার মাথার ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। খুশকি নিরাময়ের জন্য কিছু ঠান্ডা গ্রিন টি লাগান তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন।
আরো পড়ুনঃ কমলার খোসার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতার বিস্তারিত
কীভাবে ব্যবহার করবেন তার টিপসঃ এর জন্য প্রধান উপাদান হিসাবে আপনার প্রয়োজন হবে ২টি গ্রিন টি বড় ব্যাগ এবং গরম পানি। তারপরে আপনাকে গ্রিন টি ব্যাগটি গরম পানিতে প্রায় ২০ মিনিটের জন্য রাখতে হবে। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে আপনার মাথার ত্বকে গ্রিন টি লাগান। এটি ৩০ মিনিটের জন্য শুকিয়ে পানি দিয়ে আলতো করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন।
লিস্টারিন মাউথওয়াশ
এটি আপনার কাছে কিছুটা অদ্ভুত শোনাতে পারে তবে লিস্টারিন মাউথওয়াশ এই খুশকির বৃদ্ধি রোধ করতে কাজ করে। এটিতে অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে মাথায় খুশকি হয় না। আপনি যদি আজকে আমাদের ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে এই পোস্টটি পড়েন তাহলে এই উপায়টি অন্যতম কার্যকর উপায়।
এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন তার টিপসঃ
এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ১ টেবিল চামচ লিস্টারিন মাউথওয়াশ এবং কয়েক ফোঁটা পানি। তারপর একটি পাত্রে পানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন। তারপর ভালো করে অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন যেন আপনার সব খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে যায়। এই সহজ পদ্ধতিতে লিস্টারিন মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাথার খুশকি ভালো হয়ে যাবে।
মানসিক চাপের মাত্রা কমিয়ে দিন
মানসিক চাপ শারিরিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ক্ষেত্রে অনেক প্রভাব ফেলে। যদিও মানসিক চাপ সরাসরি খুশকির কারণ হয় না কিন্তু এটি শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো লক্ষণগুলিকে আরও খারাপ করতে পারে।দীর্ঘ দিন থেকে উচ্চ চাপের মাত্রা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে দূর্বল করে দেয় যা আপনার শরীরে অন্যান্য অসুখের সাথে ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে খুশকি হতে পারে। তাই চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি ধ্যান, যোগব্যায়াম, গভীর নিঃশ্বাস বা অ্যারোমাথেরাপির মতো স্ট্রেস কমানোর কৌশলগুলি প্রতিদিন করুন।
১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে - শেষ কথা
যদিও খুশকি থেকে একবারেই মুক্তি পাওয়া খুব সহজ নয় তবে কিছু সহজ টিপস ও ট্রিক্স আছে যা ব্যবহার করে অনেকটাই খুশকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যদি আপনার খুশকির লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে আমাদের পোস্টের ১০টি টিপস ও ট্রিক্স যা আপনার মাথার খুশকি দূর করবে সেগুলো চেষ্টা করুন। ইনশাআল্লাহ আপনার মাথার খুশকি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। [জব আইডি=২২৪৯৮]
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url