মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন
আপনি কি চিন্তিত আছেন আপনার মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? এ বিষয় নিয়ে। তাহলে আপনার চিন্তার অবসান ঘটাতে আজকের এই আর্টিকেলটি। এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে আমরা মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি আপনার মুখে ব্রণ নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে যান তাহলে মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন
- মুখে ব্রণ কেন হয়
- মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন
- মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম
- ব্রণের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
- আমাদের শেষ কথা
মুখে ব্রণ কেন হয়?
মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? এ বিষয়গুলো জানার আগে আপনাকে মুখে ব্রণ কেন হয় সে সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ আমরা যদি ব্রোন থেকে বাঁচতে চাই তাহলে মুখে ব্রণ কেন হয়? এ বিষয়টি আগে জেনে নেওয়া জরুরী। তাহলে খুব সহজেই সে কারণগুলো থেকে আমরা বেঁচে থাকতে পারবো।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন বিজনেস কিভাবে করব - কিভাবে অনলাইন বিজনেস শুরু করব
আমাদের ব্রণ হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে সেবাম নামের এক ধরনের তেল বের হয়। সাধারণত এটি রকেট স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। যদি এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতে ব্যাঘাত ঘটে তাহলে ব্রণ হতে পারে।
অর্থাৎ মেকআপ বা অন্যান্য নিত্যদিনের দূষণের কারণে ত্বকের ওপরে ময়লা জমে যায় যার ফলে এই তেল বের হতে পারে না সাধারণত তাই এগুলো জমা হয়ে একসময় ব্রণ হিসেবে পরিণত হয়। এছাড়া যাদের ত্বক অতিরিক্ত পরিমাণে তৈলাক্ত সাধারণত তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ময়লা, মেকআপ এবং অন্যান্য টক্সিন থেকে নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার না করলে সহজেই ত্বকের ছিদ্র আটকে যেতে পারে। এই ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে সেখান থেকে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে। কিশোর কিশোরীদের ক্ষেত্রে হরমোনের তারতম্য ঘটলে এই সমস্যাটি দেখা দেয় বেশি।
অতিরিক্ত কম ঘুম এর কারণে ব্রণ হতে পারে। আমাদের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো দরকার। এতে ত্বকে হরমোন ব্যালেন্স ঠিক থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হয় তাহলে ত্বকে হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে না যার ফলে ব্রণ হতে পারে।
মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন
আমাদের মধ্যে অনেকেই ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকে। বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের ক্ষেত্রে ব্রণের সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। অনেকের মুখে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রণ থাকে যার ফলে দেখতে অনেকটাই খারাপ লাগে। সাধারণত মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন এই নিয়ে কিশোর কিশোরীরা চিন্তিত থাকে। আপনি যদি ভেবে থাকেন মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্য।
মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন উপায় গুলোর নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার
- লেবুর রস ব্যবহার
- শসার রস
- তুলসির পাতা ব্যবহার
- বেকিং সোডা
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার - আমরা সকলেই জানি যে এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য এলোভেরা জেল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এলোভেরা জেল ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এজন্য সকালে ও রাতে এলোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে এরপরে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
লেবুর রস ব্যবহার - লেবু হচ্ছে প্রাকৃতিক একটি ব্লিচ জাতীয় উপাদান। লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। লেবুর রসের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে পানি অথবা গোলাপ জল মিশিয়ে তুলা দিয়ে ভিজিয়ে সকল জায়গায় রয়েছে সেগুলোতে লাগাতে হবে ১৫ মিনিট ধরে। এরপরে হালকা গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
শসার রস - আমরা সাধারণত চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে শসা ব্যবহার করে থাকি কিন্তু শসার রস ব্রনের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সাধারণত এইজন্য সামান্য পরিমাণে শসা ও টোমেটো রস ভালোভাবে লাগাতে হবে। এরপরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ দূর হবে।
তুলসির পাতা ব্যবহার - আমরা সকলেই জানি যে আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন হল তুলসির পাতা। আমাদের ত্বকের যত্নে তুলসির পাতা অনেক কার্যকরী। বিশেষ করে ব্রণের দাগ দূর করতে তুলসী পাতার উপকারিতা পাওয়া যায় অনেক। আমরা যদি ব্রণের দাগের নিয়মিত এই পাতার রস ব্যবহার করি তাহলে দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।
বেকিং সোডা - আরো একটি প্রাকৃতিক ব্লিচের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় বেকিং সোডা কে। ব্রণের দাগ দূর করতে বেকিং সোডা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ব্রণের দাগ দূর করতে দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে দাগে লাগাতে হবে এর পরের শুকিয়ে গেলে ভালো হবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম
সাধারণত ছেলেদের ক্ষেত্রে এটা তেমন কোন বিষয় নয়। কিন্তু মেয়েদের যদি মুখে একটি ব্রণ বের হয় তাহলে তারা অনেক চিন্তিত থাকে এটি নিয়ে। সাধারণত বিভিন্ন জায়গায় মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাই। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য মেয়েরা কত পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম গুলোর নিচে উল্লেখ করা হলো।
আরো পড়ুনঃ আপনার কাছে সফল হওয়ার মানে কি
মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- মুলতানি মাটির ব্যবহার
- কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুড়া
- আপেল ও মধুর ব্যবহার
- লেবুর রস ও গোলাপ জল ব্যবহার
- দারুচিনি গুড়া ও গোলাপজল
- নিমপাতা এবং মুলতানি মাটি
- পুদিনা পাতার ব্যবহার
মুলতানি মাটির ব্যবহার - আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য মুলতানি মাটি বেশ কার্যকরী। সাধারণত অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাবের কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। মুলতানি মাটির ব্যবহার করার ফলে ত্বকের এই অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর হয়। এছাড়া মূলদানের মাটি আমাদের ত্বকের ওপরে ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুড়া - আমরা অনেকেই জানিনা যে কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুড়া আমাদের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুড়া একত্রে নিয়ে সমপরিমাণ পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে এরপরে সেগুলোকে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে দিতে হবে।
আপেল ও মধুর ব্যবহার - আপেলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এছাড়া মধু খুবই উপকারী একটি উপাদান। আপেল এবং মধু যদি একসঙ্গে মুখে ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি আমাদের মুখের ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
লেবুর রস ও গোলাপ জল ব্যবহার - আমাদের মুখে ব্রণের কারণে দাগ দূর করার জন্য লেবুর রস বেশ কার্যকরী। আমরা যদি এই ডাক দূর করতে চাই তাহলে লেবুর রস এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে সামান্য পরিমাণ তুলা দিয়ে সেটিকে ব্রণের দাগের উপরে মালিশ করতে হবে। এর পরে হালকা গরম পানি দিয়ে সেগুলোকে ধুয়ে ফেলতে হবে।
দারুচিনি গুড়া ও গোলাপজল - আমরা যদি গোলাপ জল নিয়মিত আমাদের ব্রণের দাগের উপরে ব্যবহার করতে পারি তাহলে এটি আমাদের ত্বক থেকে ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। যদি গোলাপজলের সাথে দারুচিনি গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করা হয় তাহলে এটি আমাদের ব্রণের জন্য এবং ব্রণের দাগ দূর করতে আরো বেশি কার্যকরী।
নিমপাতা এবং মুলতানি মাটি - নিম পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিশেষ করে আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া মুলতানি মাটির কথা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। যদি ব্রণ এবং ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিমপাতা এবং মুলতানি মাটি ভালোভাবে মিশিয়ে সেটি মুখে ব্যবহার করুন।
পুদিনা পাতার ব্যবহার - অতিরিক্ত গরমের কারণে সাধারণত তাকে ব্রণ অথবা বিভিন্ন ধরনের দাগ তৈরি হতে পারে। এই ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে পুদিনা পাতা বেশ উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ভালোভাবে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে দিতে হবে এরপরে 20 মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ব্রণের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমরা সকলেই চাই আমাদের মুখ যেন সুন্দর এবং ফ্রেশ থাকে। সাধারণত মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের মুখে ব্রণের দাগ সৃষ্টি হয়। এই ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করার জন্য ঘরোয়া বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আমরা এখন ব্রনের দাগ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।
১। ব্রণের দাগ দূর করার জন্য লেবুর রসে তুলার টুকরো ডুবিয়ে ব্রণের দাগের ওপরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে ব্রণের দাগ অনেকটা দূর হবে।
২। মধু ও দারুচিনির গুড়া একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রণের দাগের উপরে লাগিয়ে দিতে হবে এরপরে সকালে ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৩। এক টেবিল চামচ বেসন, দুই টেবিল চামচ টক দই এবং এক চামচ মধু এবং হালকা পরিমাণে হলুদ মিশিয়ে ভালোভাবে ফেসপ্যাক তৈরি করে সেটিকে ত্বকের উপর লাগাতে হবে। এরপরে ১৫ থেকে ২০ মিনিটে রেখে দিতে হবে।
৪। অ্যালোভেরা জেল আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই ব্রণের দাগ দূর করার জন্য আমরা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারি।
আরো পড়ুনঃভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে কি হয়
৫। আপেল সিডার ভিনেগার ব্রণের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ২ টেবিল চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে হবে এবং ২০ মিনিট মতো রেখে দিতে হবে। এরপরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আমাদের শেষ কথাঃ মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন
প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে মুখে ব্রণ কেন হয়? মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন? মুখে ব্রণের দাগ কমানোর নিয়ম, ব্রণের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার মুখে যদি ব্রণের দাগ থাকে তাহলে অবশ্যই এই নিয়মগুলো মেনে দাগ কমিয়ে নিন।
আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে উক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনে নিন।২০৭৯১
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url